যে লক্ষণগুলো বলে দেবে আপনি মারাত্মক ক্যালসিয়াম ঘাটতিতে ভুগছেন

মুজাহিদুল ইসলাম, ঔষধ ও স্বাস্থ্য পরামর্শকঃ

ক্যালসিয়াম নামক খনিজ উপাদানটি হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও হৃদস্পন্দন ও পেশীর কাজ পরিচালনার জন্যও ক্যালসিয়াম অত্যাবশ্যক। রক্ত জমাট বাঁধতেও সাহায্য করে ক্যালসিয়াম। এই খনিজ উপাদানটি খুব সহজেই শাকসবজি, দই, বাদাম ও পনিরের মত প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া সম্ভব। তারপরও বেশিরভাগ মানুষ ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভুগে থাকে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতির উপসর্গগুলো সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। পেশীর বাধা
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকার পরও যদি আপনার পেশীতে বারবার সংকোচন হয় বা টান অনুভব করেন তাহলে আপনি ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভুগছেন ধরে নিতে হবে। পেশীর সংকোচনের সাথে সাথে পেশীতে ব্যথাও হয় বিশেষ করে উরুতে ও নিম্ন পায়ের পেছনের পেশীতে। ক্যালসিয়ামের নিম্ন মাত্রার এটি প্রারম্ভিক লক্ষণ।

২। হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া
বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে তা হাড়ের ঘনত্বের উপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে। হাড়ের ঘনত্ব কমে গেলে অস্টিওপোরোসিস হওয়ার ও সামান্য আঘাতেই হাড়ে ফাটল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।

৩। ভঙ্গুর নখ
হাড়ের মত নখের সম্পূর্ণতা বজায় রাখার জন্যও ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। ক্যালসিয়ামের অপর্যাপ্ততা নখকে দুর্বল করে দেয় এবং নখ হয়ে উঠে ভঙ্গুর।

৪। দাঁত ব্যথা
আপনার শরীরের ৯৯% ক্যালসিয়াম থাকে হাড়ে ও দাঁতে। যদি আপনার ক্যালসিয়ামের লেভেল কমে যায় তাহলে দাঁতে ব্যথা ও দাঁত ক্ষয় হতে পারে। এছাড়াও প্যারিয়োডন্টাল ডিজিজ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। শিশুদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ফলে বিলম্বিত ও ত্রুটিপূর্ণ দাঁত হয়।

৫। ঘন ঘন অসুস্থতা
স্বাস্থ্যকর ইমিউন সিস্টেম বজায় রাখার জন্য ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে যাদের তাদের সাধারণ শ্বাসকষ্ট ও অন্ত্রের সংক্রমণে ভুগতে দেখা যায়। ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ফলে প্যাথোজেনের হামলার বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।

৬। অবসাদ
ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে যারা ভুগেন তাদের হাড় ও পেশীতে ব্যথার সাথে সাথে দুর্বলতায় ভুগতেও দেখা যায়। ক্যালসিয়ামের নিম্ন মাত্রা ইনসমনিয়া, ভয় ও মানসিক বিকৃতির সাথে সম্পর্কিত। যার ফলে স্ট্রেস ও ক্লান্তি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে আপনাকে ফ্যাকাসে দেখাবে এবং ক্লান্ত ও অলস অনুভব করবেন আপনি। শিশুর জন্মের পরে যে সব নারীরা ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভুগেন তাদের ক্লান্ত বা অবসন্ন থাকতে দেখা যায়। তাদের বুকের দুধ কমে যাওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া ও চূড়ান্ত রকমের ক্লান্ত অনুভব করতে দেখা যায়। এজন্যই প্রেগন্যান্ট নারীদের দৈনিক ১০০০-১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এছাড়াও নারীর জরায়ু ও ওভারির হরমোনের সাধারণ উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড ও অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যায় ভুগতে পারেন নারীরা।- ঔষধ বার্তা

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *