ভিটামিন খাওয়ার সঠিক সময়

ঔষধ বার্তা

ডেইলি লাইফে আমরা কম বেশি সকলেই কোন না কোন ভিটামিন, মাল্টিভিটামিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট বা ভিটামিন জাতীয় ওষধ খাই। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, ঠিক কোন সময়টাতে এসব সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে ভাল কার্যকারিতা পাওয়া যায়! সময়টা বা খাওয়ার নিয়মটা এজন্যও জানা উচিত যাতে, এই সাপ্লিমেন্টগুলোর নির্দিষ্ট উপকারীতা আমাদের শরীর সঠিক ও কার্যকর ভাবে পায়। আমরা যাতে ভুলভাবে খাওয়ার ফলে ভিটামিন ঔষধের উপকারীতা থেকে বঞ্চিত না হই। সাধারণত, আমরা যে সকল ভিটামিনগুলো খেয়ে থাকি তা হল, ফ্যাট সলিউব্যাল ভিটামিন এ, ডি, ই, কে এবং ওয়াটার সলিউব্যাল ভিটামিন বি, সি, ডি।

ভিটামিন বি আবার অনেক ধরনের হয়ে থাকে বলে সামগ্রীকভাবে ভিটামিন বি কম্পলেক্স আকারেও বিক্রি হয়। মাল্টিভিটামিন বা ইন্ডিভিজুয়াল ওয়াটার সলিউব্যাল ভিটামিন, যেমন ভিটামিন-বি এর সেবণ খাবার খাওয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়, অর্থাৎ খালি পেটে বা ভরা পেটে উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। খালি পেটে এর এবসোর্বশন অর্থাৎ শোষণ ক্ষমতা বেশিই হয়ে থাকে, ভরা পেটে খেলেও সমস্যা নেই।

এছাড়া ওয়াটার সলিউব্যাল ভিটামিনগুলো সকালে খাওয়া ভাল, এতে প্রাত্যাহিক ঔষধ খাওয়ার নিয়মানুবর্তিতা ঠিক থাকবে। অন্যদিকে ফ্যাট সলিউব্যাল ভিটামিন, যেমন ভিটামিন-এ এবং -ই খাবারের সাথেই খেতে হয়, কেননা এগুলো খালি পেটে খেলে ডিসকমফোর্ট ফিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। উল্লেখ্য, যেসকল ওষুধের নামের শেষে এসিড লিখা বা এসিড জাতীয় ওষুধগুলো খাবারের পর বা ভরা পেটেই খাওয়া ভালো, কিন্তু এসিডিটির জন্য খাওয়া ওষুধগুলো খালি পেটে অর্থাৎ খাওয়ার ত্রিশ মিনিট আগেই খাওয়া উচিত। ভিটামিন-ডি সর্বদা দুধের সাথে খাওয়া উচিত, যদি ক্যালসিয়াম কম্বাইন্ড না হয়ে, ইন্ডিভিজুয়াল হয়ে থাকে৷ যদি কারো মাল্টিভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ দিনের একই সময়ে খেতে হয়, তাহলে এক ঘন্টা বা দুইঘন্টা ব্যবধানে খাওয়া ভালো। কেননা, একত্রে খেলে ড্রাগ ইন্টারেকশনের সম্ভাবনা থাকে।

একই ঘটনা ঘটে ক্যালসিয়াম আর আয়রন, জিংক, ফলিক এসিড একত্রে খেলে, তাই ক্যালসিয়ামের সাথে এসকল মিনারেল সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত নয়। যে সকল রোগীকে হরমোনাল ঔষধ, যেমন- থাইরয়েড, স্টেটিন বা এন্টিবায়োটিক খেতে হয়, তাদের উচিত ভিটামিন বা মিনারেলের সাথে এসকল ঔষধ না খাওয়া। কারন, এতে ওষুধের কার্যকরীতায় বাধার সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভব হলে এই দুইটি ঔষধের মাঝে সময়ের ব্যাবধান রাখা উচিত অন্তত দুই ঘন্টা।

উল্লেখ্য, এমন কোন এভিডেন্স নেই যা প্রমাণ করে যে ভিটামিন বা মিনারেলস বয়স্কদের জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে, বরং এসকল সাপ্লিমেন্টের মাত্রাতিরিক্ত সেবণ উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়েও দাঁড়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যেমন- অতিরিক্ত ভিটামিন-এ বা -ই সেবণ করলে খাদ্য হজমে সমস্যার পাশাপাশি রোগীকে দ্রুত অসুস্থ করে ফেলে। আবার মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম হার্ট এটাকের জন্য দ্বায়ী বলে বলতে চান অনেক গবেষক। তাই অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শ ব্যাতিত নিজে থেকে এই সকল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ না করাই ভালো।

 

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *